শিম গাছের মোজাইক (পাতা হলুদ হওয়া রোগ)

কৃষকদের পাশাপাশা, ছাদবাগানী সবাই কম বেশি ছাদে শিম গাছ লাগিয়ে থাকেন। শিম ক্ষেতে ভাইরাসজনিত মোজাইক রোগ একটি অতি পরিচিত রোগ। চারা থেকে শিম গাছ বড় হওয়ার সময় গাছের কাণ্ড ও পাতায় এ রোগের আক্রমণ হয়। এ রোগের প্রাদুর্ভাবে শিম গাছ মারা যায়। এই ভাইরাসজনিত রোগ দমনে কীটনাশক ছিটিয়ে কোনো প্রতিকার মিলে না। প্রায় সব বাগানীই এই সমস্যার সম্মুখিন হয়ে থাকেন। এমনকি কৃষকের ক্ষেতের পর ক্ষেত এই রোগের প্রাদুর্ভাবে বিলিন হয়ে যায়। এতে কৃষকরা আশানরূপ ফলন পান না। এই রোগের আদ্যপান্ত জেনে নেওয়া যাক-

রোগের নাম : শিমের মোজাইক রোগ

রোগের কারণ : ভাইরাস

ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায় , চারা

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা

লক্ষণ

  • আক্রান্ত গাছের পাতায় হলুদ ও সবুজ রঙয়ের ছোট ছোট দাগ দেখা যায়।
  • হলুদ অংশ ধীরে ধীরে বড় হয়ে সমস্ত পাতা হলুদ হয়ে যায়।
  • আক্রান্ত পাতা ছোট,বিকৃত, নীচের দিকে কোকঁড়ানো ও বিবর্ণ হয়ে যায় ৷
  • কচি ফল খসখসে, ছোট ও ফুটকি দাগযুক্ত হয় এবং কখনও কখনও ফলের রং সাদা হয়ে যায়।
  • ফুল কম আসে এবং অধিক আক্রমণে পাতা ও গাছ মরে যায় রোগের আক্রমণ বেশি হলে গাছের ফলন।

ব্যবস্থাপনা

জমি থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলুন অথবা ডালা কেটে দিন। জাব পোকা এ রোগের বাহক, এ পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমনঃ এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মি.লি./ ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সবজি বিষাক্ত থাকবে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

পূর্বপ্রস্তুতি

রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করুন।

অন্যান্য

সাবানযুক্ত পানি স্প্রে করা যায় অথবা আধাভাঙ্গা নিমবীজের পানি (১ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম নিমবীজ ভেঙ্গে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিতে হবে) আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করলে পোকা নিয়ন্ত্রন করা যায়। এছাড়াও তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার রস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। 

তথ্যসূত্র

কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।  

ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা, মোঃ হাসানুর রহমান