ছাদবাগানে পেঁয়াজ চাষ

পেঁয়াজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় উপাদানের মধ্যে অন্যতম। পেঁয়াজ রসনাকে যেমন আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু করে তোলে তেমনি খাদ্যের পুষ্টিগুণও বৃদ্ধি করে। বর্তমান  বাজারে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে বাড়ির টবেই করতে পারেন পেঁয়াজের চাষ। আসুন জেনে নিই বাড়ির টবে কীভাবে করবেন পেঁয়াজের চাষ-

স্থান নির্বাচন
বাসার বারান্দায় বা ছাদে এমন একটি স্থান বেছে নিন যেখানে প্রচুর আলো বাতাস পায়।এটুকু নিশ্চিত করুন যেন আপনার টবে দিনের অন্তত তিন ভাগের একভাগ সময় সরাসরি সূর্যের আলো পায়।

টব
পেঁয়াজ চাষের জন্য যেকোনো টব বা ড্রাম, বা বস্তা ব্যবহার করা যায়। মাঝারি সাইজের একটি টব বা ড্রাম নিয়ে তলায় কয়েকটি ছোট ছিদ্র করে নিন যাতে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যেতে পারে। মাঝারি আকৃতির টবে ৫০টি পেঁয়াজ চারা লাগানো সম্ভব।

মাটি প্রস্তুতকরণ
উর্বর এবং পানি নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত মাটিতে পেঁয়াজ চাষ করতে হবে।  দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য উত্তম। একভাগ মাটি, একভাগ বালু, দুইভাগ কম্পোস্ট ভালোভাবে মিশিয়ে দেড় ইঞ্চি নিচে পর্যন্ত মাটি ভরে টব প্রস্তুত করে নিতে হবে।

চাষের উপযুক্ত সময়

আমাদের দেশে মূলত পেঁয়াজ রবি ও খরিপ মৌসুমে চাষ করা হয়। খরিপ মৌসুমে চাষের জন্য জুলাই-আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র) ও রবি মৌসুমে চাষের জন্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ (মাঘ-ফাল্গুন) মাসে বীজ তলায় বীজ বপন করতে হয়।

পেঁয়াজের বংশবিস্তার

 পেঁয়াজ তিনটি পদ্ধতিতে চাষ করা যায়
১) কন্দ রোপণ বা  আস্ত পেঁয়াজ রোপণ
২) বীজ বপণ

পরিচর্যা

  • চারার তৈরির পর টবটি অবশ্যই ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
  •  চারার ‍তিনটি পাতা গজালে তুলে টবে রোপণ করতে হবে।
  • অতিরিক্ত শিকড় থাকলে বা শিকড় বেশি লম্বা হলে ছেঁটে রোপণ করা ভালো।
  • টবে নিয়মিত পানি দিতে হবে। তবে  অতিরিক্ত পানি দেওয়া যাবে না।
  • টবে অতিরিক্ত আগাছা জন্মালে তুলে ফেলতে হবে।
  • প্রয়োজন বুঝে সার প্রয়োগ করতে হবে ।
  • চারায় কন্দ আসতে শুরু করলে বা গোড়ায় গুটি বাঁধতে শুরু করার আগে একবার গোড়ার মাটি আলগা করে কেঁচোসার ও ছাই দিতে হবে।
  • পেঁয়াজ টবে লাগানোর ১১০-১২০ দিনের মধ্যে তা উত্তোলন করা যায়।
  • পেঁয়াজ সংগ্রহ করার অন্ততে এক সপ্তাহ আগে গোড়ার দুই ইঞ্চি উপরের অংশ কেটে ফেলতে হবে। এতে পেঁয়াজ ভালো থাকে।

পেঁয়াজ সারাবছর চাষ করা যায় তাই সঠিক জাত নির্বাচন করতে হবে। আর টবে চাষাবাদে সাধারণত রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয় তাই ঘরোয়া উপায়ে এসব দমন করা যায়।